রচনা: পদ্মা সেতু উন্নয়ন ও সম্ভাবনা | বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পদ্মা সেতু

আপনি কি পদ্মা সেতু উন্নয়ন ও সম্ভাবনা কিংবা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পদ্মা সেতু বিষয়ক রচনা খুঁজছেন? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই সাজানো হয়েছে। পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভূলবেন না। কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ সাদরে গ্রহণ করা হবে।

পদ্মা সেতু রচনা লিখার সংকেত: 

১। ভূমিকা
২। ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব (রচনা সংকেত)
৩। পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রেক্ষাপট (রচনা সংকেত)
৪। পদ্মা সেতুর বর্ণনা (রচনা সংকেত)
৫। পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় (রচনা সংকেত)
৬। পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব (রচনা সংকেত)
ক. কৃষিক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব (রচনা সংকেত)
খ. শিল্পক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব (রচনা সংকেত)
৭। পদ্মা সেতুর রাজনৈতিক গুরুত্ব (রচনা সংকেত)
৮। দারিদ্র্য বিমোচন পদ্মা সেতুর প্রভাব (রচনা সংকেত)
৯। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে পদ্মা সেতু (রচনা সংকেত)
১০। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পদ্মা সেতু (রচনার সংকেত)
১১। উপসংহার

রচনা: পদ্মা সেতু ও বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সম্ভবনা | বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পদ্মা সেতু
 রচনা: পদ্মা সেতু: উন্নয়ন ও সম্ভাবনা

ভূমিকা (পদ্মা সেতু: রচনার সংকেত)

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। নদীমাতৃক এ দেশটিতে অসংখ্য নদী জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে নির্মিত একটি সেতু। এই সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটিয়েছে। ২০২২ সালের ২৫শে জুন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুটি উদ্বোধন করেন। নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক এক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রতি এক টাকা খরচের বিপরীতে দুই টাকা লাভবান হবে বাংলাদেশ।

ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব (রচনার সংকেত)

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশের বুক চিরে বয়ে চলেছে অসংখ্য নদনদী। তাই যাতায়াত ব্যবস্থায় আমাদের প্রতিনিয়তই নৌপথের আশ্রয় নিতে হয়। এতে যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতা ও মন্থর গতি পরিলক্ষিত হয়। এই যাতায়াত ব্যবস্থাকে গতিশীল করার জন্য প্রয়োজন হয় সেতুর। সেতু থাকলে নদীর দুই দিকের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেমন উন্নতি হয়েছে, তেমনি ব্যবসায়-বাণিজ্য ভালো হওয়ায় মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটে।

সেতু নির্মাণের প্রেক্ষাপট (রচনার সংকেত)

পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন । এজন্য এই অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারের কাছে তাদের দাবি বাস্তবায়নের কথা জানিয়ে এসেছে। অবশেষে এই সেতুর সম্ভাবনার কথা বিবেচনায় এনে ১৯৯৮ সালে প্রথম সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সমীক্ষা যাচাইয়ের পর ২০০১ সালে এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কিন্তু (But) অর্থের জোগান না হওয়ায় সেতুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। পরবর্তীতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। পরে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে এই সেতুতে রেলপথ সংযুক্ত করে।

সেতুর বিবরণ (রচনার সংকেত)

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ২১ দশমিক ১০ মিটার। এই সেতুটি দ্বিতল বিশিষ্ট যার উপর দিয়ে চলবে যানবাহন এবং নিচে চলবে ট্রেন। সেতুটি নির্মিত হয়েছে কংক্রিট এবং স্টিল দিয়ে। সেতুর দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়েছে। মূল সেতুর পিলার ৪২টি; যেখানে নদীর মধ্যে রয়েছে ৪০টি ও নদীর দুই পাড়ে ২টি পিলার। নদীর ভেতরের ৪০টি পিলারে ৬টি করে মোট ২৪০টি পাইল রয়েছে। এছাড়া (Also) সংযোগ সেতুর দুই পাশের দুটি পিলারে ১২টি করে মোট ২৪টি পাইল রয়েছে। পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। মূল সেতুর কাজ পেয়েছিল চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড।

সেতু প্রকল্পে নির্মাণ ব্যয় (রচনার সংকেত)

প্রথমে (Firstly) ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প পাস করে। ২০১১ সালে সংশোধিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা এবং ২০১৬ সালে উক্ত সেতু প্রকল্পে নির্মাণের ব্যয় সংশোধন করে নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। এই সেতু নির্মাণে মোট খরচ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনবার্সন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।

পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব (রচনার সংকেত)

পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব সুদূরপ্রসারী। এই সেতু বাস্তবায়িত হওয়ায় দেশের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। কারণ (Because ) এই সেতুর মাধ্যমে রাজধানীর সাথে এই অঞ্চলের মানুষের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেছ।

নিচে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পদ্মা-সেতুর গুরুত্ব তুলে ধরা হলো-

ক. কৃষিক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব (রচনার সংকেত)

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল কৃষিক্ষেত্রে বেশ উন্নত। যেমন- যশোরের ফুল চাষ সারাদেশসহ পাশের দেশগুলোতে বিখ্যাত। বরিশালে প্রচুর ধান উৎপাদন হয়। ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জে প্রচুর পাট উৎপাদিত হয়। এসব পণ্য পরিবহনে সময় এবং ব্যয় উভয়ই বেশি হয়। অনেক সময় কৃষিপণ্য পঁচে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। কৃষকরা উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু (But) এই সেতু সম্পন্ন হওয়ায় কৃষি উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

খ. শিল্পক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব (রচনার সংকেত)

পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ায় শিল্পের বেশিরভাগ কাঁচামাল আসবে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে। ফলে ঢাকা ও চিটাগাংয়ের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল সংকটে ভুগবে না। কাঁচামাল সরবরাহ খরচ অনেক গুণ হ্রাস পাবে। দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। বর্তমান সরকারের ভিশন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে।

দারিদ্র্য বিমোচন পদ্মা সেতুর প্রভাব  (রচনার সংকেত)

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল প্রায় ৮০ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ২৩.২৪ এবং অতি দারিদ্র্যের হার ১২.৯ শতাংশ। সরকারের লক্ষ্য হলো পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে এবং অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। এই সেতু নির্মাণ ২১টি জেলার সাথে কম খরচে ঢাকায় পণ্য পরিবহন করা যাবে।

ফলে ঐসব এলাকায় পণ্যমূল্য আগের তুলনায় বৃদ্ধি পাবে। তখন জনগণ উৎপাদনে উৎসাহ পাবে এবং দ্রুত দারিদ্র্য হ্রাস পাবে।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে পদ্মা সেতু (রচনার সংকেত)

প্রিন্ট মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আমরা প্রায়ই দেখতে পাই পাটুরিয়া, দৌলতদিয়া, মাওয়া, জাজিরা ঘাটে শত শত বাস, ট্রাক ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকত। কিন্তু (But) পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ায় কম সময়ে কম টাকায় ঢাকার সাথে যোগাযোগ সম্ভব হবে। তাছাড়া এই সেতুতে রেল সংযোগ হয়েছে, যা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল এবং সহজতর করেছে।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পদ্মা সেতু (রচনার সংকেত)

পদ্মা সেতু প্রকল্পকে কেন্দ্র করে নদীর দুই পাড়ে এবং সংযোগ সড়কের রাস্তার দুই পাশে বৃক্ষরোপণের ফলে ঐসব এলাকা মরুকরণের হাত থেকে রক্ষা পারে। আবার, বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করে বলে অবাধে বৃক্ষনিধন হয়। কিন্তু (But) এই সেতু প্রকল্পের মাধ্যমে ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ দেওয়া সহজ হবে। এতে মানুষের জ্বালানির চাহিদা পূরণ হওয়ার ফলে বৃক্ষনিধন কমে যাবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে।

উপসংহার (পদ্মা সেতু: রচনার সংকেত)

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষের একটি স্বপ্নের নাম; যা দেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে দেবে। এই সেতুর ফলে দেশের দক্ষিণাঞলে গড়ে উঠবে ব্যাপক শিল্পকারখানা, গার্মেন্টস, গোডাউন প্রভৃতি। বিদেশিরা ঐসব এলাকায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি করবে। ফলে (As a Result) গতিশীল হবে অর্থনীতির চাকা; ব্যবসা-বাণিজ্যে আসবে নতুন গতি। নানান অনিশ্চয়তাকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের টাকায় বাঙালির স্বপ্ন পদ্মা সেতু এখন বাস্তবায়িত হয়েছে। এই সেতু অচিরেই বদলে দেবে দেশের অর্থনীতি, উন্নত করবে মানুষের জীবনযাত্রা।

At the present time Are you looking for a Paragraph and a Essay that based on The Padma Bridge? But can’t find best article on The Padma Bridge? Because of your interest here we share those two article. Firstly We provide the link of Essay: The Padma Bridge. And at last we provide the link of Paragraph: The Padma Bridge. So If you want to read and copy this article by clicking link below-

Firstly Click to Read: Essay: The Padma Bridge | Padda Setu Essay

Secondly Click to Read: Paragraph: The Padma Bridge | Paragraph: Padda Setu

————————————-

শিক্ষার খবর সবার আগে জানতে ShikkhaCare চোখ রাখুন ওয়েবসাইটে।

একাডেমিক শিক্ষামূলক ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে ভিজিট করুন “E Shikkha” ইউটিউব চ্যানেল।

Leave a Comment

error: Content is protected !!